শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
আয়ারাদের টাকা না দেয়ায় অপারেশন থিয়েটারে নিতে বিলম্ব হওয়ায় এক প্রস্তুতি মায়ের গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে রোগীর স্বজন এবং ওয়ার্ডে কর্মরত আয়া ও নার্সদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলে থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরবর্তীতে অভিযোগের ভিত্তিতে হালিমা বেগম নামে এক আয়াকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। তবে ওইসময় আটককৃতের অপর সহযোগীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আয়া পরিচয়ধারী আটক এই নারী হাসপাতালের বৈধ স্টাফ নন। মৃত সন্তানের পিতা ও ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মধ্য কান্দেপপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদার জানান, তার স্ত্রী বিউটি বেগম (২৫) এর প্রসব বেদনা দেখা দিলে বুধবার (২১ আগষ্ট) সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম স্বাভাবিক ও পরে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারির প্রস্তুতি নেন। বিউটি বেগমের স্বজন রওশন আরা ও শারমিন আক্তার জানান, বেলা সোয়া ১১ টার দিকে চিকিৎসক সিজারের প্রস্তুতি নিয়ে প্রসুতী বিউটি বেগমকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যেতে বলেন। এসময় তৃতীয় তলার গাইনী ওয়ার্ডের আয়া হালিমা বেগম, পপি আক্তারসহ সকলকে অনুরোধ করি যাতে ট্রলিতে করে বিউটিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা বলেন, কিন্তু এতে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে তারা ওপরে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার জন্য টাকা দাবী করেন। তখন আমাদের সাথে টাকা না থাকায় পরবর্তীতে দেয়ার আশ্বাস দিলেও তারা নিতে চায়নি। এ বিষয়ে নার্সদের সহায়তা চাওয়া হলে তারাও অসদ আচরন করেন। পরে চিকিৎসকের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যা রানী নামে এক আয়া বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ওই আয়াকে পরে দেড়শত টাকা এজন্য দেয়া হয়। সিজার শেষে প্রসুতি বিউটি বেগম ভালো থাকলেও ছেলে বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় আমরা বুঝে পাই। স্বজনদের দাবী টাকার জন্য আয়ারা বিউটি বেগমকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাসময়ে অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে যাওয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তারা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছেন। এদিকে মৃত সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা নার্স ও আয়াদের ওপর চড়াউ হন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং হালিমা বেগম নামে এক আয়াকে ওয়ার্ড থেকে আটক করেন। আটক হালিমা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বরাকোটা গ্রামের সুলতান হাওলাদারের স্ত্রী। তিনি শেবাচিম হাসপাতালের প্রসুতী বিভাগে অবৈধভাবে আয়া হিসেবে কর্মরত ছিলো আর বাকীরাও কেউ সরকারি নন বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ড মাষ্টার রাশেদুল ইসলাম। অপরদিকে অস্ত্রপচার শেষে বিউটি বেগমকে হাসপাতালের অবজার্ভেশন কক্ষে রাখা হয়েছে। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, মৃত বাচ্চার স্বজনদের অভিযোগে অভিযুক্ত আয়া হালিমা বেগমকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় রোগীর স্বজনরা মামলা করবে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। মামলা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।